হাওর বার্তা ডেস্কঃ জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় দল-মত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক দলকে এককাতারে এসে ‘গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম’ করতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয়বাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল ও মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের সমাপনী অনুষ্ঠানে রোববার বিকেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে এবং বর্তমান পার্লামেন্ট বহাল রেখে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। জনগণ যদি ভোট কেন্দ্রে না আসতে পারে, ভোট দেবে কে?
সেজন্যই আমরা বলেছি, আওয়ামী লীগ থাকলে জনগণ ভোট কেন্দ্রে আসতে পারবে না। তাই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে, পার্লামেন্ট বহাল রেখে, এবং শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে কোনো নির্বাচন হতে পারে না।
বিএনপি চেয়ারপার্সন আরো বলেন, ‘আগামী দিনে যে কর্মসূচি আসবে, সেই কর্মসূচির জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আন্দোলন, সংগ্রাম, নির্বাচন সবকিছুর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রস্তুতি নিয়ে সেভাবে এগিয়ে যেতে হবে। বিএনপির মাধ্যমেই বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশকে আওয়ামী লীগের শৃঙ্খলমুক্ত করতে হলে আমাদের আরেকবার জেগে উঠতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যান্য রাজনৈতিক সব দলকে আহ্বান জানাব, আপনারাও ভুক্তভোগী। আসুন সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করি। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।’
তিনি অারো বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া সব রাজনৈতিক দল অবাধ নির্বাচন চায়। যেটি হবে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন। সেজন্যই আমাদের দাবি হচ্ছে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
বিএনপি প্রধান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বলছেন, অনেক উন্নয়ন করেছেন। যদি সেটাই হয়ে থাকে তাহলে আসেন, দেখেন, জনগণ কাদের ভোট দেয়। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেন, তারপর দেখেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি তো আপনাদের ছিল। সেটা তো আমি দিয়েছিলাম। আমার ভয় পাই নাই। বিএনপির জনগণের দল। দাবি মেনে আমরা নির্বাচন দিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আজকে সচিবালয়ে সব দলীয় লোক। আর ভালো ভালো অফিসারদের দিনের পর দিন ওএসডি করে রাখা হয়েছে। এরকম করে থাকতে থাকতে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। একই অবস্থা পুলিশ বিভাগেও। সেখানে সিনিয়র-জুনিয়র কিছু মানা হয় না। সেখানেও তাদের চলছে একতরফাভাবে দলীয় লোকদের ঢোকানো। আর ভালো অফিসারদেরকে পদোন্নতির পরিবর্তে ওএসডি করে রাখা হয়।
এই দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলে মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি পদে ইসতিয়াক আজিজ উলফাত এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সাদেক খান পুনঃনির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া। দ্রুত পুরো কমিটি ঘোষণা হবে বলে জানান তিনি।
এই মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি মোজাফফর আলী, মিজানুর রহমান প্রমুখ।